মা ঘুমিয়ে পড়েছেন!
আর, আমি তার শিয়রে দাঁড়িয়ে আছি
মুঠোভর্তি কবিতা নিয়ে;
আলোর ছোবলে এসে, ভোরবেলা মুছে দেবে
রাত্রি থেকে বিচ্ছুরিত অনাথ কাহিনী।
নিরাকার ভস্ম হয়ে পুড়ে যাবে সকল কবিতা
কিন্তু এই রাত্রিবেলা, বোস্তামিকে মনে করে
আমি যদি দাঁড়িয়ে থাকি,
এভাবে কি জানা হবে- পিপাসায় আমার মা
কি চেয়েছেন?
আমি কেন কবিতাই মুঠো ভরে আনতে পেরেছি?
তবে একথা সত্যি, আমি হয়ত অভাবিত কাটিয়েছি দিন;
পিপাসায় পানি আর কবিতাকে সদর্থক ভেবে
দ্বিতীয় ভুলের দিকে কবিময় সফলতা কুড়োতে গিয়েছি।
এছাড়া স্বীকার করছি- প্রথম ভুলের জন্যে
ভূমিষ্টকে দায়ী করে আমার মামলাগুলো
এখনও খারিজ হয়ে যায়নি!
ফলে, আমার যে-বোন পালিয়ে গেছে
তার জন্যে আধোগুপ্ত কান্নাজাগা রাতে
দেখেছি, অনেক কবিতাই চোখ ফেটে বেরিয়ে আসতে চায়;
যদিও, কবিতাজন্মের প্রথম শর্ত ‘শব্দ’... সেই শব্দই এড়িয়ে
নিঃশব্দ আমার মা; আমি আর পিপাসাকে
বুঝতে পারিনি বলে
বাৎসল্যের চোখ থেকে ঝরে পড়া কবিতাও পরতে পারিনি
মা এখন ঘুমোচ্ছেন।
আর, আমি তার শিয়রে দাঁড়িয়ে আছি
মেঘলিপ্ত সম্ভাবনা নিয়ে:
রাতের যে-কোনও প্রান্তে, ঘুম ভাঙলে,
আমার বিনিদ্র হাতের মুঠো খুলে, তাকে এই
জলমর্ম কিভাবে জানাব?
যদিও সংশয় থাকে, মেঘমর্মে কবিতা না-কবিতার
প্রবণতা জল হয়ে থাকে?
উল্লেখ্য আমার পিতা সন্ধে থেকে ঘরেই ফেরেননি; তিনি
গার্হস্থ্য-বনের দিকে, হাঁটতে হাঁটতে হাত নেড়ে ডাকছেন-
জোনাকি... ও জোনাকি, ফিরে আয়
সেই যে আগুন আমাকে শিখিয়ে গ্যাছে, ছোটরা পালিয়ে গেলে
রোদের ছোবলে পুড়ে
সন্ধ্যার অদূরে একা পৃথিবীর জোনাকি হয়ে যায়!
তাই, অন্ধকারে অঙ্কুরিত উড্ডিন যন্ত্রণা
যা আমাকে ভালবেসে উপচে দেয় বাক্য উপহার
আজ মা’র শিয়রে দাঁড়িয়ে, এই যে দেখছি ঘুম, আবার দেখব আলোয়
ভোরবেলা নিরাকার ভস্ম হয়ে পুড়ে যাচ্ছে
মুঠোভর্তি আমার কবিতা